মোঃ একরামুল হক মুন্না, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ বরেন্দ্র নিউজ
পঞ্চগড় সদর উপজেলা শহর থেকে ১৩ কিঃমিঃ পূর্বদিকে ৫নং চাকলাহাট ইউনিয়নের পশ্চিম পাশে বর্তমানে যেখানে মরহুম কবাদ আলী প্রধান শিশু সদন এতিমখানা অবস্থিত তার আশে-পাশে অন্য কোন ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় দূর্গম এ এলাকায় ১৯৯৩ সালে কিছু ধর্মপ্রান মুসল্লী ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি বর্গের সহযোগিতায় এবং মরহুম আলহাজ্ব খামির উদ্দীন প্রধান এর উদ্যোগে এই প্রতিষ্ঠানটির পথ চলা শুরু হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় গুটি গুটি পা পা করে আজ প্রায় সফলতার ২৭ বছর অতিক্রম হচ্ছে এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের।
দিন দিন শিক্ষার্থী বৃদ্ধি পেলেও রয়েগেছে নানা সমাস্য। তবে থেমে নেই মাদরাসার দ্বীনি শিক্ষা দান। প্রতিদিন ভোর থেকেই শুরু হয় এলাকার গরিব, অসহায় এতিম শিক্ষার্থীদের আরবি শিক্ষার পাঠদান। বর্তমানে এই মাদরাসাটি গোটা অঞ্চলকে দীনি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর হতে এ মাদরাসাটি নুরানী শিশু শ্রেণি হতে হাফেজী পর্যন্ত তার আপন লক্ষপানে সুনামের সহিত এগিয়ে চলছে। ৩৩ শতাংশ জমির উপরে নির্মিত হয়েছে এই প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের প্রায় ৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা ব্যায়ে নতুন পাকা একটি রান্নাঘর সহ খাবার ঘর পাকা, গোসলখানা, টয়লেট সহ পানির লাইন, পানির পাম্প, খড়িঘর, উঠান পাকা, রিং টিউবওয়েলের সংস্কার এর কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছরে ।
ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ সালাম জানান, বর্তমানে দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে এ মাদরাসাটি। মাদরাসার প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানে নিয়োজিত আছেন ৩ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক। মাদরাসাটি গত ২০০২ সালে সমাজসেবা মন্ত্রণালয় থেকে ক্যাপিটেশন গ্রান্ট ২ জন এতিম এরপর থেকে বেরে বর্তমান ২০ জন এতিম। সমাজসেবা মন্ত্রণালয় থেকে চলতি বছরে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার অনুদান পেয়েছি। কিন্ত মাদরাসায় ৪০ জন ছাত্র হওয়ায় প্রতি মাসে খাওয়া দাওয়া, শিক্ষকের বেতন, মাদরাসার অন্যান্য খরচ সহ প্রতি মাসে ব্যয় হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা এবং দানশীল ব্যক্তিদের সহযোগিতায় ও বর্তমান সভাপতি মোঃ জসিয়ার রহমান প্রধান এর পরিবারের সহযোগীতায় মাদরাসা পরিচালনা কমিটি পরিচালনা করে আসছেন। এরিমধ্যে গত ৪ নভেম্বর সকাল ৯ টায় চাকলাহাট গ্রামের মোঃ আবুল হোসেনের পুত্র মোঃ কামরুজ্জামান বুলেট সহ কয়েকজন শিশু সদন এতিমখানায় প্রবেশ করেন। শিক্ষক ও কর্মচারীদের উপর চড়াও হন এরপর নাস্তার ডাল-ভাত খাওয়া অবস্থায় ছাত্রদের ভিডিও ধারন করেন।
এদিকে রাঁধুনি মোছাঃ মরিয়ম আক্তার জানান, আমি ছাত্র দেরকে ভাত ও ডাল দিয়ে শিদ্ধ ডিম আনার জন্য রান্না ঘরে গেলে বুলেটের সহযোগীরা আমাকে বাধা প্রদান করেন। আর আমাকে বলে ভিডিও শেষ হবে তার পর বাচ্চাদের ডিম দিবি।
শিশু সদন এতিমখানার ছাত্ররা জানায়, একদিন আমরা সকালে ভাত, ডাল,ভর্তা, ডিম খাই। আরেক দিন খিচুড়ি ও ডিম খাই। দুপুরে সবজী, মাছ অথবা মাংস খাই। রাঁতের বেলা সবজী, ডিম ভাজা অথবা ছোট মাছ খাই। আমাদের সভাপতি একটি ডিপ ফ্রিজ ক্রয় করেদেন মাছ, মাংস মজুদ রাখার জন্য। বুলেট আমাদের বলে তোমাদের উন্নত খাবারের জন্যে মোবাইল দিয়ে একটি ভিডিও করবো এরপর ভিডিওটি ঢাকায় পাঠাবো তা নাহলে তোমাদের
সমাজসেবা মন্ত্রণালয় এর টাকা বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি
মোঃ জসিয়ার রহমান প্রধান জানান, দ্বীনি ইসলাম শিক্ষা করা সকল মুসলমানের উপর ফরজ করা হয়েছে। মুসলমান সন্তানদের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ইসলামের প্রতি গভীর ভালোবাসার টানে এই জায়গায় প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার উদ্যেগ গ্রহন করছিলেন এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম খামির উদ্দীন
প্রধান। তিনি ইন্তেকাল করেন ২০০৫ সালের ১৬ই ডিসেম্বর এরপর থেকে আমি এই
প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করে আসছি। প্রতিষ্ঠানের যদি কোন অনিয়ম হতো তাহলে মোঃ কামরুজ্জামান বুলেট পরিচালনা কমিটিকে বিষয়টি অবগত করলে আমরা ঘটনার সত্যতার উপর ব্যবস্থা নিতাম। তা নাকরে শিক্ষক ও ছাত্র এবং কর্মচারীদের জিম্মী করে ভিডিও ধারণ করে ফেসবুক এ ছাড়িয়ে দেন বিষয়টি দুঃখ জনক ।
এবিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা ৫নং চাকলাহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ ফরাদ হোসেন জানান, মরহুম কবাদ আলী প্রধান শিশু সদন এতিমখানা সফলতার ২৭ বছর ধরে বর্তমানেও দ্বীনি শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে এ মাদরাসাটি। এরি মধ্যে চলতি মাসে এই ইউনিয়নের ছোট ভাই মোঃ কামরুজ্জামান বুলেট ফেজবুকে প্রতিষ্ঠানের বিপক্ষে লেখায় চাকলাহাট ইউনিয়ন বাসীর জন্য দুঃখ জনক।
Leave a Reply